ভাবসম্প্রসারণ বাংলা ২য় পত্রঃ পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি প্রত্যেকে মহান আল্লাহ তা'লার অশেষ মেহেরবানীতে ভালো আছো । আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করবো পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর ভাবসম্প্রসারণ । 

ভাবসম্প্রসারণ বাংলা ২য় পত্রঃ পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর


পোস্ট সূচিপত্রঃআজকের এই পড়াটি যদি তুমি ভালো করে গুছিয়ে শিখতে চাও তাহলে তোমাকে অবশ্যই আত্মশক্তি অর্জনই শিক্ষার উদ্দেশ্য ভাবসম্প্রসারণটি খুব মনযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়তে হবে । তাহলে চলো আর দেরি না করে শুরু করা যাক । 

পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর ভাবসম্প্রসারণ

পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর


পাপ-পুণ্য মিলেই এ দুনিয়া। পাপ অপবিত্র কিন্তু পাপী অপবিত্র নয়। কেননা সে পাপ দ্বারা কলুষিত। তাই পাপীকে নয়, বরং পাপকে ঘৃণা করতে হবে।

পাপ বলতে আমরা অন্যায় কাজ ও অধর্মকে বুঝি। যে অন্যায় কাজ, অধর্মের কাজ করে, তাকে আমরা পাপী বলি। সাধারণভাবে আমরা পাপ ও পাপী উভয়কেই ঘৃণা করি; কিন্তু এটা ঠিক নয়। পাপ অবশ্যই ঘৃণার কাজ, কারও জন্যই তা বাঞ্ছনীয় নয়। পাপের ফলে মানুষের ইহকাল ও পরকাল দুই-ই নষ্ট হয়। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। পৃথিবীতে যখন একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হয় তখন সে থাকে নিষ্পাপ। তার বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চাওয়া-পাওয়ার প্রসার ঘটে। না চাইতেই যে পায় সে হয়তো এ সংঘাতকে এড়াতে পারে। কিন্তু যে শিশু জন্মের পর থেকে বা পরবর্তীতে বিরূপ পরিবেশে বড় হয়, দুঃখ-কষ্ট, ক্ষুধা আর নির্যাতনের সাথে যার বাস জীবনের প্রয়োজনে তার পক্ষে সমাজের নিষিদ্ধ পথে, পাপের পঙ্কিল পথে পা বাড়ানো অস্বাভাবিক নয়। বাধ্য হয়েই সে পাপী হয়। কিন্তু জন্মের সময় তো সে পাপী ছিল না; বরং পরিবেশের প্রতিকূলতাই তাকে পাপী করেছে। অনুকূল পরিবেশ পেলে; স্নেহের, ভালোবাসার একটু পরশ পেলে হয়তো বা তার হৃদয়ে সৃষ্টি হতে পারে অনুতাপের অমিয় ধারা। এ জগতে এমন অনেক উদাহরণ আছে যাঁরা জীবনের একটি সময়ে অনেক পাপ কাজ করেছেন কিন্তু পরবর্তী জীবনে তাঁরাই

মানবকুলের শিরোমণি হিসেবে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করেছেন। উদাহরণ হিসেবে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা)-এর কথা বলা যায় যিনি ইসলামের নবি হজরত মুহম্মদ (স)-কে হত্যার জন্য উন্মুক্ত তরবারি নিয়ে হজরতের (স) দিকে ছুটে গিয়েছিলেন। তাই পাপীকে ঘৃণা করে সমাজকে কলুষমুক্ত করা সম্ভব নয়। সেজন্যই পবিত্র হাদিসে বলা হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো পাপকার্য অনুষ্ঠিত হতে দেখলে সে যেন হাত দিয়ে তাতে বাধা দেয়, নয়তো মুখ দিয়ে তা নিষেধ করে। আর যদি তাও না পারে তবে যেন অন্তত অন্তর দিয়ে সেই পাপকার্যকে ঘৃণা করে।” পাপ তাই সর্বদা বর্জনীয়; কিন্তু পাপীকে বর্জন করা বা ঘৃণা করা ঠিক নয়। কেননা মানুষ অনেক সময়ই পাপ করে নানা কারণে বা অবস্থার বিপাকে পড়ে। ইচ্ছা করে হয়তো সে তা করেনি। অথবা অজ্ঞতার কারণে কিংবা অভাব-অনটনে পড়ে বা রিপুর তাড়নায় বাধ্য হয়ে সে পাপ করেছে। অনেকে পরিণাম না বুঝে অনেক কাজ করে যা অত্যন্ত খারাপ, কিন্তু তাদের বুঝিয়ে বললে তখন সে পাপের জন্য তারা অনুশোচনা করে, অনুতপ্ত হয়। এমতাবস্থায় পাপীকে ঘৃণা | করা কখনো ঠিক নয়; বরং ক্ষমা করে মহত্ত্ব দিয়ে পাপীকে কাছে টেনে নিলে পাপীও পাপের পথ ছেড়ে সুপথে ফিরে আসে। মহানবি

হজরত মুহম্মদ (স) তাঁর অশেষ ক্ষমাগুণ দিয়ে বহু পাপীকে সৎপথে ফিরিয়ে এনেছিলেন। পাপীকে ঘৃণা করা যাবে না। পাপকে ঘৃণা করতে হবে, পাপীকে ক্ষমার মাধ্যমে সুপথে ফিরিয়ে আনতে হবে।


আর্টিকেলের শেষ কথাঃ  ভাবসম্প্রসারণ বাংলা ২য় পত্রঃ পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর

আশা করি আজকের এই পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর ভাবসম্প্রসারণের বিষয়ে তুমি ভালো ধারনা পেয়েছো । এই আর্টিকেলটি যদি তোমার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই তুমি তোমার ফেইসবুক ফ্রেন্ডসদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেনা । এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url