ফেসবুক মার্কেটিং । ফেসবুক মার্কেটিং বাংলা টিউটোরিয়াল ২০২৩

সবাইকে Educationalblogbd.com এর পক্ষ থেকে জানাই আসসালামুআলাইকুম । আশা করি সবাই ভাল আছেন আল্লহর রহমতে । আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো ফেইসবুক মার্কেটিং নিয়ে । 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা বড় অংশ জুরে রয়েছে ফেইসবুক মার্কেটিং (Facebook Marketing) । ফেইসবুক মার্কেটিং এ আমরা সবাই অভ্যস্ত তার কারন হলো দিন শেষে আমাদের জীবনের অনেক বড় একটা অংশ আমরা কাটাই ফেইসবুকে । কেউ স্ক্রল করতে করতে বা কেউ ভিডিও আপলোড করে আবার কেউবা কোনো একটা গ্রোপে কেউ গ্রোপ স্টাডির কাজে । 

আমাদের লাইফের যে একটা বড় অংশ ফেইসবুকে আছে, যার কারণে আমাদের ফেইসবুকে মার্কেটিং করে অনেক লাভ ও আছে । তার কারণ হলো আপনি দিন শেষে যেই প্রোডাক্ট-ই বিক্রি করেন না কেন, সেই প্রোডাক্টের যারা কাস্টমার আছে তারা ফেইসবুকে আছে । তাই তাদেরকে টার্গেট করার জন্য বা তাদের জন্য মার্কেটিং করার করার জন্য ফেইসবুক খুবি প্রক্রিয়াশীল বা ইফেক্টিভ । 

ফেসবুক মার্কেটিং । ফেসবুক মার্কেটিং বাংলা টিউটোরিয়াল ২০২৩

ফেইসবুকে কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়? 

এখন ফেইসবুকে কিভাবে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারবেন । অবশ্যই এখানে কিছু অর্গানিক পদ্ধতি আছে, যার অর্থ হচ্ছে আপনি এখানে টাকা না খরচ করেও আপনি ফেইসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন । আবার কিছু পেইড (Paid) পদ্ধতি ও আছে । তার মানে হলো আপনি যখন ফেইসবুক পেইজে একটা পোস্ট দেন, নিচে খেয়াল করে দেখবেন বোস্ট পোস্ট (Boost Post) নামে একটি অপশন আছে । সেখানে যদি আপনি ক্লিক করেন তাহলে আপনাকে ফেইসবুক বলবে আপনি কাদের কাছে এই পোস্টটা বোস্ট করতে যাচ্ছেন, আপনি সেখানে বয়স সেট করে দিতে পারবেন । যে এত থেকে এত বয়সের মানুষের কাছে, ছেলে, মেয়ে উভয়কে, অথবা শুধুমাত্র মেয়েদের কাছে, অথবা, শুধুমাত্র ছেলেদের কাছে, এই জেলায়, শুধুমাত্র সিলেট জেলায় অথবা শুধুমাত্র আম্বরখানায় । তাই সবগুলো প্যারামিটার্স সেট করে আপনি বলবেন যে প্রতিদিন ৫০ ডলার করে বোস্ট করো, তাহলেই আপনাকে ফেইসবুক বলে দিবে ৫০ ডলার করে খরচ করলে আপনার টার্গেটের মানুষদের কাছে আমরা এতহাজার মানুষদের কাছে পৌছাতে পারবো । 

তাই, এভাবে চাইলেই কিন্তু আপনি ফেইসবুক পেইড মার্কেটিং করতে পারবেন । মনে রাখবেন, দিন শেষে পেইড মার্কেটিং করে খুটি খূটি কয়েকজন মানুষ । অনুমানিক ৫%-৭% । 

ফেইসবুক মার্কেটিং কি উপায়ে করা যায়? 

টাকা খরচ না করে ফেইসবুক মার্কেটিং করতে চাইলে আপনাকে ফেইসবুকের দুটি প্লাটফর্ম থেকে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে । 

১। ফেইসবুক পেইজ (Facebook Page) 

২। ফেইসবুক গ্রোপ (Facebook Groups)

ফেইসবুক পেইজ ও গ্রোপের মাধ্যে কিছু পার্থক্য আছে । সেটা হলো আপনারা অনেক সময় অনেকেই দুটানার মধ্যে থাকেন যে কোন প্লাটফর্মটা ব্যবহার করে ফেইসবুক মার্কেটিং করবেন, পেইজ নাকি গ্রোপ? 

আপনি দুটি প্লাটফর্ম দিয়েই শুরু করতে পারেন । যা আপনার জন্য অনেক ভাল হবে । কারণটা বলি কেন দুটি প্লাটফর্ম দিয়ে ফেইসবুক মার্কেটিং শুরু করেবন । 

১। ফেইসবুক পেইজ (Facebook Page)

পেইজ হলো যোগাযোগের একটি পথ মাত্র । যেখানে একটি প্রতিষ্টানের পেইজ শুধু কথা বলে, ভিডিও দেয়, ছবি দেয়, পোস্ট দেয় এবং লিখা দেয় । আর আমরা ভিজিটররা শুধু দেখি, বুঝি । ভাল লাগলে শেয়ার কমেন্ট করি । 

২। ফেইসবুক গ্রোপ (Facebook Groups) 

গ্রোপ হচ্ছে এমন একটি প্লাটফর্ম সেখানে প্রত্যকের যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে । সেখানে একটি প্রতিষ্টান যেমন পোস্ট দেয় অপরদিকে গ্রোপের সদস্যরা ও পোস্ট দেয় । তার মানে হলো গ্রোপে সুন্দর একটি যোগাযোগ তৈরি হয় । 

তাই আমার পরামর্শ হলো আপনি দুইটা প্লাটফর্ম এক সাথে শুরু করেন ফেইসবুক মার্কেটিং এর জন্য । 

এখন মনে করেন, আপনি ঘড়ির ব্যবসায় করেন । আপনার পেইজের নাম হলো BD Watch । এই পেইজে যখন আপনি পোস্ট দিচ্ছেন তখনি তখনি মানুষ দেখছে । 

এখন আবার চিন্তা করুন, ঐ একই নামে আপনি গ্রোপ খুললেন । তাহলে যারা ঘড়ি পছন্দ করে, সবাই কিন্ত ঐ গ্রোপে আস্তে আস্তে সংযুক্ত হবে । অথবা আপনি যদি লোকজনকে বলেন যে ভাই আমি একটা বিডি ওয়াচ নামে গ্রোপ খুলেছি আপনারা এই গ্রোপে এড হন । তখন আস্তে আস্তে মানুষ জনও কিন্ত আপনার গ্রোপে সংযুক্ত হতে থাকবে । 

আরো পড়ুন:-   রকেট দিয়ে সেন্ড মানি করার নিয়ম ২০২২                 

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আস্তে পারে গ্রোপে অন্যদের এড করে কী লাভ হবে? উত্তর হলো, গ্রোপে বিভিন্ন ইউজারদেরকে এড করলে আপনার যে সুবিধা হবে তাহলো গ্রোপে শুধু আপনার পোস্ট দেয়া লাগবেনা । মানুষ জনকে বলতে পারেন, আপনার প্রিয় একটি ঘড়ির ছবি তোলে আপলোড করুন । তখন ঐ গ্রোপের সব মেম্বার তাদের প্রিয় ঘড়ির ছবি তোলে আপলোড করতে শুরু করবে । তখন আপনার গ্রোপের একটা সুন্দর কমিউনিটি তৈরি হবে । তাই আমার সাজেশন পেইজ এবং গ্রোপ এক সাথে খোলেন ফেইসবুক মার্কেটিং এর জন্য । 

কোন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করে পোস্ট দিবেন ফেইসবুক মার্কেটিং এর জন্য? 

ফেইসবুকের কনটেন্ট সাধারণত তিন প্রকার । যথাঃ- 

১। লিখা দিয়ে পোস্ট (Writing Post) 

২। ছবি দিয়ে পোস্ট (Image Post) 

৩। ভিডিও পোস্ট (Video Post) 

লিখা দিয়ে পোস্ট (Writing Post) 

ফেইসবুক মার্কেটিং করতে হলে অবশ্যই আপনাকে অনেক ঘাটাঘাটি করতে হবে । এবং এটা বাড়ানোর জন্য আপনাকে কপিরাইটিং স্কিল অনেক বাড়াতে হবে । কপইরাইটিং মানে আপনার যে কনটেন্ট আছে সেটা যে কপি বা লিখাকে বোঝায় । 

এটার বেশ কিছু ফরমুলা আছে । ফরমুলা গুলো কি আপনাকে জানতে হবে । 

ফরমুলা হলো এরকম যে আপনি একটা পোস্ট লিখবেন সেটার ক্যাপশনটা কেমন হবে, যেমন একটা ফর্মুলা হলো 

 সমস্যা, সফলতার গল্প এবং সমাধান । 

এখন আপনার মনে নিশ্চই প্রশ্ন হয়েছে এটা আবার কোন ধরনের ফর্মুলা । 

হ্যাঁ ভাই এটা অনেক কার্যকরী একটা ফর্মুলা । 

ধরে নিন, আপনি একটা মোবাইল বিক্রি করবেন । তাই, যখন আপনি মোবাইল নিয়ে কনটেন্ট লিখবেন তখন নিশ্চয় এরকম বলবেন, “কখনও কি আপনি চিন্তা করে দেখেছেন, প্রতিন আপনাকে কতবার মোবাইলে চার্জ দিতে হয়, আপনার জন্য কত কষ্ট” একটু খেয়াল করে দেখেন তো এটা একটা সমস্যা । 

তারপর বলা যাক ‘সফলতার গল্প’ 

“আমার এক বন্ধু আছে, যাকে দেখলাম সারাদিন মোবাইল ব্যবহার করে কিন্তু চার্জ করতে হয়না” আবারো খেয়াল করে দেখেছেন এটা একটা সফলতার গল্প । 

তারপর বলা যাক “সমাধানের গল্প” 

“যে এই মোবাইল হলো সেই মোবাইল, তাই আপনি চাইলে এই ফোনটি কিনে নিতে পারেন, যার ফলে আপনাকেও আর সারাদিন চার্জ করতে হবেনা” এটা হলো সমাধান । 

পুরো গল্পটি একসাথে করলে দেখা যায় 

কখনও কি আপনি চিন্তা করে দেখেছেন, প্রতিন আপনাকে কতবার মোবাইলে চার্জ দিতে হয়, আপনার জন্য কত কষ্ট । আমার এক বন্ধু আছে, যাকে দেখলাম সারাদিন মোবাইল ব্যবহার করে কিন্তু চার্জ করতে হয়না । যে এই মোবাইল হলো সেই মোবাইল, তাই আপনি চাইলে এই ফোনটি কিনে নিতে পারেন, যার ফলে আপনাকেও আর সারাদিন চার্জ করতে হবেনা । 

আরো পড়ুন:-  আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম 

তাহলে, চিন্তা করেন একটু আগে যে ক্যাপশনটা বললাম সেটা কিন্তু ঐ তিনটি ফর্মুলাই মেনেছে । এরকম আরো অনেক কপিরাইটিং এর ফর্মুলা রয়েছে । যা আপনি চাইলে ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন । এই ফর্মুলা গুলো আপনি অনুসরণ করে অনেক দ্রুত এবং সহজে অনেক অনেক কনটেন্ট পোস্ট লিখতে পারবেন । যার ফলে আপনি অনেক সহজেই ফেইসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন । 

ছবি দিয়ে পোস্ট (Image Post)

ছবি কিভাবে তৈরি করতে পারবেন সেটার একটি সহজ উপায় হলো আপনি বিনামূল্যে Canva app দিয়ে মোবাইল দ্বারা ছবি তৈরি করে ফেলতে পারবেন । যার দ্বারা পোস্টার বানাতে পারবেন, ফেইসবুকের কাভার তৈরি করতে পারবেন ও গ্রোপের কাভার তৈরি করতে পারবেন । যদি canva app দ্বারা আপনি ছবি তৈরি করতে না পারেন, তাহলে ইউটুবে সার্চ করে একটি ভাল টিউটুরিয়াল দেখে নিতে পারেন । 

ভিডিও দিয়ে পোস্ট (Video Post) 

বর্তমানে ফ্রিতে মোবাইল দ্বারা খুবি ভালমানের ভিডিও তৈরি করা যায় Inshot app দ্বারা । 

ভিডিও আপলোড দেওয়ার কিছু নিয়ম 

ভিডিও আপলোড দেওয়ার সময় আপনাদেরকে বেশ কিছু ব্যাপার লক্ষ্য করতে হবে । বিশেষ করে আপনি যখন ভিডিও আপলোড করেছেন, তখন ভিডিওর টাইটেল ও থাম্বনেইল খুবি গুরুত্বপূর্ণ । কারন হলো আপনার ভিডিও নিউজ ফিডে অনেক জনেই স্ক্রল করে যাবে, ক্লিক করবে কি করবেনা, সেগুলো নির্ভর করে দুটি জিনিসের ঊপর । ১। ঐ ভিডিওর থাম্বনেইল ২। এবং ঐ ভিডিওর টাইটেল । 

তাই আপনার ঐ ভিডিওর ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল যদি ভাল না হয়, দিন শেষে মানুষ আপনার ভিডিওটাইতে ক্লিক করবেনা । তাই ভিডিও যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি ক্যাপশন বা টাইটেল এবং থাম্বনেইল ও ঠিক তথটা গুরুত্বপূর্ণ ফেইসবুক মার্কেটিং এর জন্য । 

ভিডিও আপলোড দেওয়ার সময় আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখবেন সেটা হলো রাইট ম্যানেজার । আপনার আপলোড করা ভিডিও দেখবেন আরেকজন কপি করে তার প্রোফাইলে আপলোড করে ফেলেছে । এই কাজটা যেন কেউ না করতে পারে, সে জন্য আপনার রাইটস ম্যানেজার চালু করে রাখবেন । 

কি ভাবে ফেইসবুক মার্কেটিং করে বেশি সেল করা যায়? 

সপ্তাহের ৭দিনের মধ্যে কোনদিন পোস্ট করলে সবথেকে বেশি মানুষ দেখে, এটা খোজে বের করুন । আপনি যদি এখন কোনো একটা প্রোডাক্ট বিক্রি করেন, একটা ব্যাপার খেয়াল করে দেইখেন, যে শুক্রবারে মানুষ বেশি প্রোডাক্ট ক্রয় করে থাকেন । কারণ শুক্রবারে মানুষ বাসায় থাকে এবং অর্ডারটা দেয় যাতে করে শনিবারের মধ্যে প্রোদাক্টটা তাদের হাতের মধ্যে এসে যায় । এটা যদি আপনি জানেন তাহলে আপনি রবিবারে ফেইসবুক মার্কেটিং করবেন না । আপনার বেস্ট ভিডিওটা হয়তোবা আপনি বৃহস্পতিবার রাতে পোস্ট দিবেন, যে ঐ রাতে মানুষ মোবাইলে বেশি এক্টিভ থাকে এবং আপনার ভিডিওটা বেশি মানুষ দেখতে পাবে । এবং অর্ডার ও করে । এই জিনিসটা আপনার মাথায় রাখা লাগবে । 


  আরো পড়ুন:-  রকেট একাউন্ট এর ব্যালেন্স দেখার নিয়ম 

শুধু কি সপ্তাহের দিন, না যেই দিন পোস্ট করছেন, ঐদিনের কোন সময়ে পোস্ট করলে সবথেকে বেশি মানুষে দেখে, সেটাও খোজে বের করুন । হতে পারে সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা । তার মানে, সপ্তাহের কোন দিন পোস্ট করা উচিত, কোন সময়ে পোস্ট করলে সেটা সবথেকে বেশি মানুষে দেখবে, সেটা মাথায় রেখে আপনার পোস্ট গুলো করতে হবে । তাতে করে আপনার ফেইসবুক মার্কেটিং সফল হবে ইনশাল্লাহ । 

শেষ কথাঃ 

ফেইসবুক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে, এই যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম, এই বিষয়গুলো যদি আপনি মেনে চলেন, কপিরাটিং এর ফর্মুলা যদি ব্যবহার করেন, ছবি এবং ভিডিও তৈরি করার জন্য যদি অ্যাপ ব্যবহার করেন এবং ফেইসবুক পেইজ ও গ্রোপ যদি একই সাথে ব্যবহার করার নিয়মগুলো যদি মেনে চলেন তাহলে আপনার জন্য ফেইসবুক মার্কেটিং আরো প্রক্রিয়াশীল হবে । শুধু তাই নয় আমার বলা পদ্ধতিগুলোকে যদি মেনে চলেন তাহলে আপনি অর্গানিক্যালি আপনার প্রোডাক্ট বহু মানুষের কাছে পৌছে দিতে পারবেন যার জন্য কোনো পেইড পদ্ধতিতে ফেইসবুক মার্কেটিং করার প্রয়োজন পরবেনা ।     


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শিক্ষামূলক ব্লগ বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url